নুসরাতের গলা চেপে ধরেন মনি, আগুন দেন জাবেদ, দুজনের জবানবন্দিতে ২ নতুন তথ্য পেয়েছে পিবিআই

ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাশিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফি হত্যায় সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবাবন্দি দিয়েছেন তার সহপাঠী কামরুন্নাহার মনি ও জাবেদ। শনিবার বিকাল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শরাফ উদ্দিন আহম্মেদের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন তারা।

আদালতে দুই জন স্বীকারোক্তি দিয়েছেন যে, ‘নুসরাতকে হাত-পা বাঁধার পর মনি ছাদে শুইয়ে গলা চেপে ধরেন। জাবেদ নুসরাতের গায়ে এক লিটার কেরোসিন ঢেলে ম্যাচ জ্বালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন।’

শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকেলে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফউদ্দিন আহমদের আদালতে তাদের উপস্থাপন করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ছয় ঘণ্টার জবানবন্দি রেকর্ডের পর রাত ১০টার দিকে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন (পিবিআই) এর চট্টগ্রাম বিভাগের স্পেশাল পুলিশ সুপার মো: ইকবাল।

তিনি বলেন, ‘আদালতে এ দুজন স্বীকারোক্তি দিয়েছে যে, ‘তারা তাদের সহপাঠী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার কিলিং মিশিনে সরাসরি জড়িত ছিলো। আসামি জাবেদ হোসেন, পলিথিন থেকে নুসরাতের সারা শরীরে কেরোসিন ঢেলে দেয়। এর আগে ২৮ ও ৩০ মার্চ দুই দফা কারাগারে থাকা সিরাজউদদৌলার সঙ্গে দেখা করে তারা। ৪ এপ্রিল সকালে ‘অধ্যক্ষ সাহেব মুক্তি পরিষদের’ সভা করা হয়। রাতে ১২ জনের এক সভায় হত্যার পরিকল্পনা চ‚ড়ান্ত ও দায়িত্ব বণ্টন করা হয়। জাবেদ কেরোসিন ঢালার পর কামরুন নাহার মনি নুসরাতের শরীর চেপে ধরে। উম্মে সুলতানা নামের একজন চলে যাওয়ার সময় নুসরাতের পায়ে ধাক্কা লাগলে মনি তাকে শম্পা বলে ডাকে। এই শম্পা নামটি পপি ও মনির দেয়া নাম। এই কিলিং মিশনে আর কোনো ছদ্ম নাম ব্যবহার করা হয়নি। মনি আরও জানিয়েছে বর্তমানে সে ৫ মাসের অন্ত:সত্বা।’

এসপি ইকবাল আরো বলেন, ‘কয়েক ঘণ্টাব্যাপী এ স্বীকারোক্তিমূলক জবাবনন্দিতে এ দুজন হত্যাকাÐের ব্যাপারে চাঞ্চল্যকর অনেক তথ্য দিয়েছেন। জবানবন্দিতে নতুন কিছু নামও উঠে এসেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তা উল্লেখ করা যাবে না।

কামরুন নাহার মনিকে ১৫ এপ্রিল সোনাগাজী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৭ এপ্রিল আদালত তার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। শুক্রবার মনিকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায় পিবিআই। সে সময় মনি কিভাবে নুসরাতকে হত্যা করা হয়েছে তার বর্ণনা দেন।

অপরদিকে জাবেদকে গত ১৩ এপিল চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই দিন থেকে তাকে ৭ দিনের রিমান্ড দেয়া হয়। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে ফেনীর সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সারাফ উদ্দিন আহমেদের আদালত তাকে ফের তিন দিনের রিমান্ড দেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment